এম এম কিট: কাজ, ব্যবহার বিধি, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং সতর্কতা

এম এম কিট (M M Kit) একটি ঔষধ, যা মূলত গর্ভপাত ঘটানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এতে সাধারণত দুটি ঔষধ থাকে: মাইফেপ্রিস্টোন (Mifepristone) এবং মিসোপ্রোস্টল (Misoprostol)। এদের সম্মিলিত কাজের ফলে গর্ভপাত সম্পন্ন হয়। এই ব্লগে আমরা এম এম কিট এর কাজ, খাওয়ার নিয়ম, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং সতর্কতা নিয়ে আলোচনা করব।

এম এম কিট এর কাজ


এম এম কিট এর দুটি ঔষধ একসাথে কাজ করে


১. মাইফেপ্রিস্টোন: এটি প্রথমে খাওয়া হয় এবং গর্ভাবস্থার প্রগেস্টেরন হরমোনের কার্যকারিতা বন্ধ করে দেয়, যা গর্ভধারণের জন্য প্রয়োজনীয়।

২. মিসোপ্রোস্টল: এটি মাইফেপ্রিস্টোন খাওয়ার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরে গ্রহণ করা হয়। এটি জরায়ুর সংকোচন ঘটিয়ে গর্ভপাত সম্পন্ন করে।

এম এম কিট খাওয়ার নিয়ম


১. প্রথম দিন: প্রথমে ২০০ মিগ্রা মাইফেপ্রিস্টোন খেতে হয়।
  
২. দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন: মাইফেপ্রিস্টোন খাওয়ার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরে ৪০০ থেকে ৮০০ মাইক্রোগ্রাম মিসোপ্রোস্টল গ্রহণ করতে হয়। এই ঔষধগুলি মুখে অথবা যোনিপথে গ্রহণ করা যেতে পারে।

৩. ফলো-আপ পরীক্ষা: ১৪ দিন পরে একজন ডাক্তার দ্বারা আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে গর্ভপাত সম্পূর্ণ হয়েছে কিনা।

এম এম কিট খাওয়ার পর পেট ব্যাথা


এম এম কিট খাওয়ার পর পেট ব্যাথা হওয়া স্বাভাবিক। মিসোপ্রোস্টল জরায়ুর সংকোচন ঘটায়, যা ব্যথার কারণ হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে বেশি তীব্রও হতে পারে। পেট ব্যাথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

এম এম কিট খাওয়ার পর বমি হলে


এম এম কিট খাওয়ার পরে বমি হতে পারে, বিশেষ করে মিসোপ্রোস্টল গ্রহণের পর। যদি ওষুধ খাওয়ার ১-২ ঘণ্টার মধ্যে বমি হয়, তবে ওই ডোজটি আবার গ্রহণ করতে হতে পারে। তবে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এম এম কিট খাওয়ার পর কতদিন ব্লিডিং হয়


এম এম কিট খাওয়ার পর সাধারণত ১-২ সপ্তাহ ধরে রক্তপাত হতে পারে। প্রথম ৪-৬ ঘণ্টা রক্তপাত খুবই ভারী হতে পারে, তারপর ধীরে ধীরে তা কমে যায়। যদি রক্তপাত অনেক বেশি সময় ধরে চলে বা খুব বেশি হয়, তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এম এম কিট খাওয়ার ঝুঁকি


এম এম কিট খাওয়ার পরে কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে, যেমন:


অতিরিক্ত রক্তপাত: এটি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেও, অত্যধিক রক্তপাত হলে তা জরুরিভাবে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
  
অপূর্ণ গর্ভপাত: কখনও কখনও গর্ভপাত সম্পূর্ণ হয় না, যা চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

সংক্রমণ: যদি গর্ভপাতের পর যোনি থেকে বাজে গন্ধ আসে বা জ্বর হয়, তাহলে তা সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে।

এম এম কিট খাওয়ার পর সাদা স্রাব


এম এম কিট খাওয়ার পরে কিছু ক্ষেত্রে সাদা স্রাব হতে পারে। এটি সংক্রমণের একটি লক্ষণ হতে পারে, তাই সাদা স্রাবের সাথে যদি দুর্গন্ধ থাকে, জ্বালা বা চুলকানি হয়, তবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

এম এম কিট একটি কার্যকরী পদ্ধতি, তবে এটি ব্যবহারের আগে এবং পরে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঔষধটি খাওয়ার পরে যদি কোন অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, যেমন অতিরিক্ত ব্যথা, বমি, রক্তপাত বা সাদা স্রাব, তবে দেরি না করে চিকিৎসা নিতে হবে। নিরাপদ এবং সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এম এম কিট গর্ভপাতের একটি নিরাপদ মাধ্যম হতে পারে।

এই ব্লগের তথ্যগুলি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়েছে। যেকোন ঔষধ গ্রহণের আগে অবশ্যই একজন যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Previous chapter Next chapter
No Comment
Add Comment
comment url