জীবনের অল্প কথা

 

বাংলা
 জীবনের গল্প
আমি চোখ বাধায় অবস্থা বাসর ঘরে প্রবেশ করে। যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। তাকে আমি চিনি না।

এমনকি তার নামটাও আমি জানিনা। চোখ বেঁধে বিয়ে করাটা আমাদের বংশী নিয়মের মধ্যে নেই। চোখ বেঁধে বিয়ে করা দোষটা আমারই।


এর জন্য আমি দায়।আজ থেকে কয়েক মাস আগে একটি মেয়ের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে। মেয়েটা দেখতে বেশ সুন্দরী। আমারও পছন্দ হয়।

 তিন চার মাস আগে

ময়না নামে এক মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করে বাবা মা। দেখতে বেশ সুন্দরী। আমারও বেশ পছন্দ হয়। বাবা মায়ের ও বেশ পছন্দ হয়। বিয়ের পিঁড়িতে বসে বিয়ে বাড়িতে সুন্দর সুন্দর মেয়ে দেখে আমার চোখ হালকা ঝাপসা ধরে গেল।


আমি মনের ভাবতে লাগলাম। ময়না থেকে এত সুন্দর সুন্দর মেয়ে থাকতে আমি কেন ময়নাকে বিয়ে করতে আসলাম।

 আরেকটু খুঁজা খুঁজি করি


এর থেকে অনেক সুন্দর মেয়ে পেতাম। তখন আমি বাবাকে কানে কানে বললাম। বাবা আমার ময়নাকে পছন্দ হচ্ছে না। আর আমি বিয়ে করব না বাবা তখন আমার দিকে তাকিয়ে বেঞ্চি দিয়ে বলল।

এখানে চুপ করে বসে থাক। একটা কথাও বলিস না।তখন আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম। যাকে আমার পছন্দ হয় না। তাকে নিয়ে আমি কিভাবে সংসার করবো।

যে করি হোক এ বিয়ে ভাঙতেই হবে


আমি আস্তে আস্তে দাঁড়ালাম। চোখ বন্ধ করে ধর  মারলাম । আমার পিছনে অনেকে দৌড়িয়ে ছিল। ধরার জন্য ধরতে পারিনি। চোখ বন্ধ করে এক ধরি বাড়িতে চলে আসলাম। বাড়িতে এসে বাসর ঘরে একা একা বসে রইলাম।

বাবা কিছুক্ষণ পরে বাড়িতে এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করল। তারপরেও আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না। অপছন্দের মেয়েটাকে ওর বিয়ে করতে পারব না তো। বিয়ে করতে হয়নি আমি চলে এসেছি।আমি চলে আসার পর বাবা তার বন্ধুর ছেলের সাথে ময়নার বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। বিয়ে দিয়ে দেয় নিজের সম্মান রাখার জন্য

তারপরে দু-তিন মাস দিব্যি গুড়ে বেরালাম কোন প্রবলেম ছিল না। শান্তিতেই ছিলাম।

দু-তিন মাস পরে আর ভালো লাগেনা


একা একা আর কতদিন। তখন মনে মনে ভাবলাম বিয়েটা করে ফেলা দরকার। বাবাকে গিয়ে বললাম বাবা কিছুতেই রাজি হচ্ছে না। তারপরে আমি কানে ধরলে বললাম বাবা আমি আর এ তোমার মনটা কখনো করবো না। বাবা আমার কথা মোটেও শুনতে চাইছে না। আমি কানে ধরে অনেকবার উট বস করার পর বাবা বলল আচ্ছা ঠিক আছে

দেখছি আমি মনে শান্তি পেলাম। বাবা দেখে শুনে আরেকটা সুন্দর মেয়ের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করল মেয়েটা দেখতে ময়না থেকে অনেক সুন্দর আমারও পছন্দ হয়েছে। বাবা মার তো আরো পছন্দ হয়েছে। মেয়েটা দেখতে অনেক সুন্দর। তার ফ্যামিলি অনেক ভালো। দেখতে দেখতে বিয়ের দিন এসে গেল। সমস্ত আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে এসে গেল

আমার বন্ধু নিশাত আমেরিকায় থেকে এখনো আসেনি। আমেরিকাতেই বিমান আছে। বরযাত্রী নিয়ে বেরিয়ে যাব। আস্তে আস্তে বিকেল পাঁচটা বাজিয়ে দিল। যখন আসলো ওর স্ত্রীও ছিল। আর স্ত্রীকে দেখে আমি তো অবাক হয়ে গেলাম। এত সুন্দর একটা ফর্সা মেয়েকে বিয়ে করেছে। যাতে কিছু ছড়াতে ইচ্ছা করে না। একদম ধবধবে সাদা আমার হবু বউ।ওর কাছে কিছুই না।তখন আমি মনে মনে ভাবতে লাগলো।

নিশাত আমার থেকে ছাত্র কত খারাপ ছিল। দেখতেও মুতে আমার থেকে ভালো না। লটারি পেয়ে আমেরিকায় গিয়েছিল। আর সে সেখানে গিয়ে এত সুন্দর একটা মেয়ে বিয়ে করল। তাহলে আমি কি করলাম

 না না, কিছুতেই বিয়ে করা যাবে না


আমারও সাদা চামড়া নিয়ে কি বিয়ে করতে হবে। কি করবো বেবি কুল পাচ্ছিনা। ভেবে পাচ্ছিনা বরযাত্রী রেডি হয়ে গেছে। আমাকেও সাজানো শেষ হয়ে গেছে। আমি মনে মনে ভাবলাম এ কান থেকে যেভাবেই হোক আমাকে পালাতে হবে

এখানে থাকলে আজকে অপছন্দ মেয়েটাকে বিয়ে করতে হবে। তারপরে আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলাম। দুই মাস ওদিক সেদি বাড়িতে ফিরে আসলাম। বাড়িতে আসার পর বাবা আমার সাথে কথা বলে না।

আমাকে দেখলেই মুখ ঘুরিয়ে রাখে। তারপরে আমার মনে কোন কষ্ট ছিল না। কারণ অপছন্দ মেয়েটাকে তো আর বিয়ে করা যাবে না।

তবে দু তিন মাস কেটে গেল


আর একা একা ভাল লাগেনা। একা খাঁটি ঘুমিয়ে থাকি। তখন আবার মনে মনে ভাবলাম। এবার বিয়ে করতেই হবে। বিয়ে ছাড়া চলবে না। একা একা ভাল লাগেনা। আর কতদিন আইবুড় থাকবো।

বাবাকে গিয়ে বললাম আমি বিয়ে করবো


বাবা আমার এই কথা শুনি রেগে গেল। তোর সাথে আমার এ ব্যাপারে কোন কথা নেই। আমি জীবনেও তোকে বিয়ে করাতে পারবো না। তারপর আমি বাবার পায়ে পড়ে গেলাম। পায়ে পরি কাঁদতে লাগলাম। বাবা কিছুতে আমার উপর ভরসা করছে না।বাবা ভাবছে আবারো আমি এরকম করব। বাবা বলল তুই যাই বলিস না কেন।

আমি তোর বিয়ের কাজে আর নেই। আমি বাবার পায়ে পড়ে কান্না করতে লাগলাম।পরে আমি বাবাকে বললাম যাকে পছন্দ করবে আমি তাকেই বিয়ে করবো।

বিয়ে আগে আমি মেয়েকে দেখব না। নামো জানতে চাইবো না। হলে চোখ দিয়ে আমি তাকিয়ে বিয়ে করবো। পরে বাড়িতে এসে আমার চোখ খুলে দিও। এ কথাটা শোনার পর বাবার একটু মন নরম হল।

বাবা আচ্ছা ঠিক আছে


বাবা বলল দেখছি কি করা যায়। একটি মেয়েকে ঠিক করলো। আমি তার নামটাও জানলাম না। দেখতে কেমন সেটাও জানলাম না। মনে মনে ভাবতেছিলাম কি যে হয় আল্লাহই জানে।

আমি খুব ভয়ে ছিলাম। কিছুটা বিশ্বাস হচ্ছিল। মনে মনে ভাবলাম দুইটার মত হলেই হবে। এত সুন্দরের দরকার নেই।

তারপরে চোখ বন্ধ করে বিয়ে করতে গেলাম। কনে পক্ষে লোকেরা যদি ও সন্দেহ করেছিল। বাবা বলেছিল এটা আমাদের বংশের পরম্পরা। আমাদের বংশের ছেলেরা এভাবে বিয়ে করে। চোখ বাঁধায় অবস্থা।

তারপরে তারা এমন কিছু বলেনি। আমার বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হলো। পরে বাড়িতে চলে আসলাম।বাড়িতে চলে আসার পর বাসর ঘরে আমাকে ঢুকিয়ে দেয়া হলো।

তারপরে বাহির থেকে তালা দেয়া হলো। বউ যদি আমার পছন্দ না হয়। জাতি আমি পালিয়ে না যেতে পারি। বাসর ঘরে ঢুকার পর। ভয় করছিল আমার। চোখ খুলতে ভয় পাচ্ছি।

চোখ খুলে কাকে দিয়ে দেখবো


তাকে আমার পছন্দ হবে কিনা। ভয়ে আমি চোখ খুলতে ছিলাম না। তারপরই মনে মনে ভাবলাম। খুলবো না তার সাথে একটু কথা বলি। দিয়ে শুরু করব বুঝতে পারছি না। তখন আমি তাকে বললাম আচ্ছা তুমি কি গান গাইতে পারো। বললো হা এখন আমি তাকে বললাম।

তোমার পছন্দমত একটা গান গাও। গানটা অত্যন্ত সুন্দর। অত্যন্ত সুন্দর তার ভয়েস। আর গান শুনে মনে হচ্ছে হাজার বছর আগে শুনেছি। আগেও শুনেছি পরিচিত লাগছে তার কন্ঠটা। মনে মনে ভাবলাম এত সুন্দর মানুষটা কেমন হবে। অসুন্দর হবে না। আস্তে আস্তে চোখটা খুললাম। খোলার পর আমি যা দেখলাম।

 যা দেখার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না


আমি দেখলাম ভূত সেজে রানু মন্ডল বসে আছে। গল্পের শিক্ষা। ছেলেরা বিয়ে করতে গিয়ে বেশি বাসাবাশি করে। সে ছেলেদের কপালে বউ না। আরো একটা কথা সুন্দর এ পিসির ছুটবেন না। সব দিক মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করবেন। শুধু সুন্দরী পিছনে ছুটলে আপনি কখনো সুন্দরী শেষ খুঁজে পাবেন না।

Previous chapter Next chapter
2 Comments
  • Anonymous
    Anonymous April 22, 2023 at 11:34 PM

    Hey 😊

    • Niloy Marjan
      Niloy Marjan October 17, 2023 at 1:09 PM

      ❤️❤️

Add Comment
comment url