বাবা, আজও তোমাকে বলা হয়নি

 বাবা

বাংলা
 বাবা
মারজানের বাবা দিনে মোটামুটি। ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা ইনকাম করে থাকেন।

কিন্তু তার ২৫ বয়সী ছেলেটা মারজান খুশি হয়। বরং সে মোটেও খুশি নয়। পাই ঐ বাবার সাথে ঝগড়া করে। তার বাবার কুদ্দু ইনকামের জন্য। তার অনেক ইচ্ছা তার বাবা পূরণ করতে পারে না। তাদের এই সামান্য ইনকামে ৫ জনের সংখ্যা সংসার কিছু রকম চলে যায়।

 মারজানের অনেক ইচ্ছা 


মারজানের অনেক বায়না থাকে। এগুলো তার বাবা পূরণ করতে পারে না। তার অনেক ইচ্ছা একটা ল্যাপটপ আরেকটি এটিএম বাইক কিনবি। কিন্তু তার বাবা কোন টাকা দেয় না।

দিবে কোথায় থেকে যে টাকা ইনকাম করে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। কিন্তু ২৫ বয়সে এসে। ছেলে মারজান ইনকামের তো কোনো সাহায্য করে না। সারাদিন বন্ধু-বান্ধব আর ফোন পড়ে থাকে। বাবা-মা বলার সত্ত্বেও কোন কথায় সে শুনে না।

বাবা তাকে মাঝে মাঝেই বলে কিছু একটা কর। আমার তো বয়স হয়ে যাচ্ছে। আমি তো এখন সংসারে গানি টানতে পারছি না। কিছু একটা কর।


আবার এমন কথা শুনে মারজান রেগে গিয়ে বলে। খাওয়াতে পারবে না পড়াতে পারবে না শখ পূরণ করতে পারবে না। তাহলে ছেলেকে জন্ম দিয়েছো কেন। বর্তমানে যুগে টাকা ইনকাম করা। কোন কঠিন কিছু নাকি। বর্তমান যুগে টাকা ইনকাম করা খুবই সহজ। টাকা এখন আকাশে উড়ে।


মারজান মুখে এমন কথা শুনে। মারজান বাবা অনেক কষ্ট পেয়েছিল। আর রেগে গিয়ে বলল টাকা আকাশ উড়ে হলে দেখি কালকে আমাকে ৫০ থেকে ইনকাম করে দেখা।

মারজান তখন হাসতে হাসতে বলল


সামান্য ৫০ টাকা তো আমার হাতের ময়লা কালকে তোমাকে আমি ৫০০০ টাকা ইনকাম করে দেখাবো।

বাবা তখন বলল। বাবা তখন বলল ৫০০০ টাকা দরকার নেই। কালকে ৫০ টাকা ইনকাম করে দেখা। পরের দিন সকালে মারজান না খেয়ে বাড়িতে থেকে বের হয়ে গেল। টাকা ইনকাম করার জন্য

বাবাকে প্রতিজ্ঞা করি বলেছে। সে পাঁচ হাজার টাকা ইনকাম করে দেখাবে। সেই উদ্দেশ্যে বাড়িতে তেকে বের হয়ে গেল। মনে মনে ভাবতাছে ৫০ টাকা নয় আজকে পাঁচ হাজার টাকা ইনকাম করে দেখাবো

 বাবাকে আমি দেখিয়ে দিব 


এদিকে তো মারজান রাগের মাথায় বাবাকে নানান কথা বলল দিয়েছে। সে কাজ করবে কিভাবে করবে টাকা ইনকাম করবে। তা তো সেই জানে না। কোন কাজ হইতো তার জানা নেই। তখন হাঁটতে হাটতে এসে একজন রাজমিস্ত্রি দেখল তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করল।


আপনাদের এখানে কি কোন কাজ হবে। আপনার এখানে কোনো লোক নেওয়া হয়।

রাজমিস্ত্রি তখন বলল


এখানে একটা লোক লাগবে। আপনি কি কাজ করতে চান। তখন বলে আমি আপনাদের সাথে কাজ করতে চাই।ও আমাকে দিনে কত টাকা দিবেন। রাজমিস্ত্রি বলল আপনাকে আমি আড়াইশো থেকে ৩০০ টাকা দিতে পারব। এ কথা শুনে মারজান মাথা হয়ে গেল গরম। মারজান তখন রাগ করে বলল। সারাটা দিন কাজ করে আড়াইশো টাকা 300 টাকা দিবেন। গুল্লি মারি আপনার কাজে। সেখান থেকে রাগ করে চলে গেল। এদিকে ঘুরতে ঘুরতে দুপুর হয়ে গেল। টাকা ইনকাম করা তো দূরের কথা এখনো কোনো কাজই খুঁজে পেল না এদেরকে কিদার জ্বালায় পেট্টা চুচু করছে।


তারপর যখন দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা তখন সে আর সহ্য করতে পারছে না। একটা হোটেলে গিয়ে সেখানে ইচ্ছামতো খাবার খেলো। কিন্তু তার পকেটে একটা টাকাও নাই। যখন সে সেখান থেকে চুপিচুপি চলে আসতে লাগলো।


তখন হোটেলে মালিক তাকে ধরে ফেলল


তখন বলল টাকা দিতে সে বলল আমার কাছে তো টাকা নাই। আর প্রচুর ক্ষুধা লেগেছিলতাই খেয়ে ফেলেছি। দেখে ভদ্রলোকই মনে হচ্ছিল। দয়া মায়া করে তাকে আর মার দিল না। তুমি কাজ করে আমার টাকাশোধ করে দিয়ে যাও।তার কাজ হলো এক ঘন্টা হোটেলে সমস্ত বাসন তারা দুয়ে দিয়ে দিতে হবে। এই ছেলেটা কখনো বাড়িতে এক গ্লাস পানি নিজে নিয়ে খাইনি। এই ছেলেটা আজকে বাসনতলা দুয়ে দিতে হচ্ছে। আগে তো কখনোই কাজ করেনি। তাই বাসুন দুয়ে দিতে পারেনা। ফান্দে পড়ে গেছে এবার কিছুই করার নেই।


তারপরে কষ্ট করি বাসুন দুয়ে লাগলো



বাসুন দুয়ে সময় একটা দামি ভাষুন ভেঙ্গে ফেলল। তখন হোটেলের মালিক ঘাট ধাক্কা দিয়ে বের করে দিল।

এদিকে সন্ধ্যা লেগে গেল এখনো কোনো কাজই পায়নি। এদিকে বাবাকে জোর গলায় বলে আসলো।

আজকে পাঁচ হাজার টাকা ইনকাম করে বাবাকে দেখাবে। এতক্ষণে সে এক টাকা ইনকাম করতে পারে নাই ।

যেখানে গিয়েছে সেখানেই অপমানিত হয়েছে


তখন মন খারাপ করে ফুলের মধ্যে বসেছিল। তখন তার জিদ কমেনি। ঠিক মনে মনে ভাবতাছে। যেভাবেই হোক আজ কে পাঁচ হাজার টাকা ইনকাম করি। না হলে আমি বাড়ি ফিরব না। সে সময় একটি ভ্যান গাড়ি আসলো ভ্যান গাড়ি বোঝাই মালপত্র ছিল। গাড়িওয়ালা কিছু কিছুতে ফুল দিয়ে যেতে পারছে না। তখন ভ্যান গাড়িওয়ালা তাকে ডাক দিয়ে বলল।


ভাই আপনি কি আমাকে একটু সাহায্য করতে পারবেন। মারজান তখন মনে মনে ভাবলো। পেয়েছি এক সুযোগ। আমি ৫০ টাকা কামিয়ে নিব।

মারজান তখন বলল আমাকে ৫০ টাকা দেন। তাহলে আমি আপনাকে সাহায্য করবো। বেন গাড়িওয়ালা রেগে গিয়ে বলল। আপনি তো আচ্ছা খারাপ মানুষ আমি একটু বিপদে পড়েছি কোথায় একটু সাহায্য করবেন। সেখানে আপনি টাকা চাইছেন।

আপনার কি মানবতা বলতে কিছু নেই। মারজান তখন বলল আমার মানবতা বলতে কিছুই নেই। আমাকে ৫০ টাকা দিলি আমি আপনাকে ধাক্কা দিব না হলে দিব না। তখন ভ্যান গাড়িওয়াল এদিক-ওদিক তাকিয়ে কোনো মানুষ নেই।

তারপরে বিপদে পড়ে তাকে ৫০ টাকা দিয়ে সাহায্য করতে হয়েছে। তারপরে সেই ৫০ টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরল। বাড়িতে যাওয়ার সাথে সাথে বাবা মা। বাবা তাকে বলল রাগ কমেছে সারাদিন কোথায় চিলি না খেয়ে।

মারজান তো তখন তার বাবাকে রাগ দেখিয়ে বলল


রাগ করি আমি বাড়ি থেকে যায়নি। আমি পাঁচ হাজার টাকা ইনকাম করতে দিয়েছিলাম। আর আর পাঁচ হাজার টাকা ইনকাম করেছি। টাকা দিয়ে ভালো বল খাবার খেয়েছি। তাই একটু দেরি হয়ে গেছে।আর তুমি যে ৫০ টাকা চেয়েছিলে। এই নেও তোমার ৫০ টাকা।মারজান বাবা তখন বলল পুকুরের মধ্যে ফেলে দিয়ে আয় কিভাবে ৫০ টাকা ইনকাম করেছিস।জানি তাকে তুই বিপদে ফেলে টাকাটা নিয়েছিস। সে আমার পরিচিত সে আমাকে সব কিছু বলেছে। আমরা দুজনেই একই কোম্পানিতে কাজ করি। ও তোকে কিছুটা চিনে।

মারজান তার ভুল বুঝতে পারল


আর বুঝতে পারল টাকা ইনকাম করা কতটা কঠিন। এতদিন তার বাবাকেও অল্প ইনকাম করার জন্য কথাগুলো শুনিয়েছে। এজন্য সে নিজেই কষ্ট পাচ্ছে। আজ বুঝে গেছি হালাল ইনকাম করে সংসার চালানো।কতটা কঠিন।

তারপর তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলল। কালকা থেকে আমি একটা কিছু করার চেষ্টা করব। তোমাকে সাহায্য করবো। আর আমি কখনো ঘুরে বেড়াবো না।


গল্পের শিক্ষা। সময় হয়ে গেলে বাবার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। বাবার অল্প ইনকাম বাবা কে ছোট করে কথা বলবেনা। একটা কথা মনে রাখবেন। হালাল ইনকাম সামান্য সেটাতে অনেক আনন্দ আছে। এটা লক্ষ কোটি টাকাতে নেই। হাজার বছর বেঁচে থাকো নিজের রক্ত পানি করে। সংসার চালানো বাবা গুলো।

গল্পটা কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন।

Previous chapter Next chapter
No Comment
Add Comment
comment url