ভালোবাসার গল্প - আর ফিরে আসে না
ভালোবাসার গল্প |
মানুষের জীবনটা বড়ই অদ্ভুত। মানুষের জীবন যেমন আলাদা। প্রত্যেক মানুষের জীবন গল্পটাও আলাদা। শুরু এবং শেষের কোনো মিল থাকে না।আমরা জীবনে সময় পাই।না পাওয়া থেকে যায় হৃদয় এক কোণে। এই গল্পটা বানিয়েছেন মারজান। |
একটা ছেলের সাথে আমার ১০ বছরের সম্পর্ক ছিল।ওর বাড়ি ছিল আমার মামা বাড়ির পাশে। মামা বাড়িতে গিয়ে ওর সাথে আমার পরিচয়।
যখন তা সাথে আমার পরিচয় হয়
তখন আমি খুব ছোট ছিলাম লজ্জার কারণে কথা বলতে পারতাম না। তাই আমাদের মধ্যে এসএমএসের মাধ্যমে কথা হতো। এভাবে কিছু মাস কেটে যায়। কিছু মাস এসএমএস এর মাধ্যমে কথা বলতাম। একদিন হঠাৎ সে আমার সাথেদেখা করতে চাইছিল।
আমি ভয় পেয়েছিলাম তারপরে রাজি হয়ে গেলাম। তার তড়াজড়ি কারণে আমি বাধ্য হই।
তারপরে আমি দেখা করতে যাই। ওদিকে একজন লোক দেখে ফেলে। সবকিছু দেখে বাড়িতে গিয়ে বলে দেয়। প্রথম দেখা করলাম প্রথমবারই ধরা খেয়ে যায়। বাড়িতে আসার পর কিছুই বলে না। ৭ দিনের মধ্যে একটি ছেলেকে যাচাই পেচা না করে।
একটা ছেলের সাথে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেয়
ছেলেটা ইউরোপে থাকতো। কিছুদিন পর এই ছেলেটা যাওয়ার সময় বলে যায়। পাসপোর্ট ভিসা সবকিছু সে আমাকে ইউরোপে নিয়ে যাবে। কয়েকদিন পরে বাড়ি থেকে জানতে পারি যে। ছেলেটার ক্যারেক্টার ভালো না। ছেলেটার অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে। আমার মা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়।
সেখানে রাখবে না ভালো মন্দ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বয়স আমার হয়নি। যখন আমার বিয়ে ছিল। তখন আমি বলতে পারিনি। আমি বিয়ে করব না। তখন নিয়ে আসছিল। তখনো বলতে পারিনি যে। আমি এখানেই থাকবো। আমি কোথাও যাব না। ওই ছেলের কাছ থেকে আমাকে নিয়ে আসে। বাড়িতে নিয়ে আসার পরে সব দোষ আমারই হয়। যদি ছেলের সাথে প্রেম না করতি। তোকে তো বিয়ে দিতাম না। এমনটা হতো না। যাই হোক আমি আবার স্কুলে ভর্তি হই। এভাবে দুই বছর কেটে যায়। এতদিনে সেই আমার প্রথম প্রেমিক। দেখা করার কারণে বিয়ে হয়ে গেল।
এই ছেলেটা বিদেশে চলে গেছে। তার সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। এই দুই বছরের মধ্যে আমি কোনো সম্পর্কে জড়াইনি। এবং কারো সাথে সম্পর্কই করিনি।
জীবনের প্রথম এই দুইজনে ভালোবেসেছিলাম তো
তাই কেউ কাউকে মন থেকে সরাতে পারিনি। দুই বছর পর ওর সাথে আমার দেখা হল। কথা হল এবং যোগাযোগ হল। ওর বাড়িতে বিয়ের কথা বলে আমিও বলি আমাদের বাড়ি থেকে মোটেও রাজি হয় না। আমি অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু। কোন লাভ হয়নি। আমরা দুজনই পালিয়ে বিয়ে করি। যেহেতু সে বিদেশে ছিল। আমরা মোবাইল ফোনের মধ্যেই বিয়ে করি। পাস করো না। পাস্ট করোনা। ও আসতে পারিনি। আমার বাড়িতে ওকে না মানার কারণ ছিল। হচ্ছে ওরা আমাদের থেকে গরীব। ও একটু কালো। এজন্য আমার পরিবার কিছুতেই মানতে চাইছে না। আমাদের সম্পর্ক নিয়ে সবাই হাসাহাসি করতো। কিন্তু ওকে আমার ভালো লাগতো।
ওই আমার সবকিছু মনে হতো!
ওকে ছাড়া আমি কিছুই বুঝতাম না। অনেকটা বুঝানোর পরেও যখন আমার পরিবারকে মানাতে পারলাম না।
তখন আমি ৩০ টা ঘুমের ট্যাবলেট একবার খেয়ে নিলাম । ওকে আমি একটা এসএমএস দেই। আমার পরিবারকে আমি বুঝাতে পারলাম না। সে এসএমএসটা দেখেছিল। কিছু মধ্যে সে ঘটনাটাও জেনেছিল। ওর বাড়ি ছিল আমার আত্মীয় বাড়ির পাশেই।
তারপরে আমার দুই ভাই ঢাকা হসপিটাল মেডিকেলে নিয়ে যায়। এখান থেকে কিছুটা সুস্থ হই বাড়িতে আসি। টিকমত হাঁটতে পারিনা। সেই সময় একটা ছেলে আমাকে দেখতে আসে।
তারপরে সে আমাকে পছন্দ করে।
আমার সবকিছু জানার পরেও আমাকে বিয়ে করতে চায়। আমাদের বাড়ির সবাই রাজি হয়ে যায়। এখন আমি কোনো উপায় না পেয়ে। বাড়িতে তাকে পালিয়ে যায়। যেহেতু সে বিদেশে ছিল। আমাকে একাই পালাতে হয়েছিল। পালিয়ে গিয়ে এক বন্ধুর বাসায় শুধু ফোনে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছিল। সেখানে যাওয়ার পর কয়েক দিন ভালোই কাটে। কয়েকদিন পর আমার বন্ধুর বাসা থেকে ছাপ আসে।
পরে আমি সেখানে থাকতে পারিনা। এখন আমি বাড়িতে ফোন করি। আমরা সবকিছু মেনে নিব তুই চলে আয়। তবে আমি বাড়িতে আসি বাড়িতে আসার পর। ওরা সব ভুলে যাই। উল্টো আমাকে বুঝাতে থাকে।
ওই ছেলেকে বিয়ে করার জন্য। ছেলে তো আমাদের বাড়ি আশেপাশে ঘোরাফেরা করে। বাড়ির মানুষগুলো ওদের বাড়িতে যায়। পরে বিয়ের সঠিক হয়ে যায়। এখন আমি কোন উপায় না পেয়ে।
আবার বাড়ি থেকে পালায়। আমি পরিবারকে অনেক ভালবাসতাম। কিন্তু কিছু করার ছিল না। যে মানুষটাকে ভালোবাসি। মানুষটাকে বিয়ে করেছি। তাকে ছাড়া আমি দুনিয়ার কিছুই চাই না।
পরে দুই বছর বাড়িতে আমি আসি না।
আমি দুই বছর কলেজে থেকে যাই। বাড়িতে থেকে খুব সাপোর্ট করতো। পুলিশে জামাল হওয়ার পর থেকে। ওদের বাড়ি থেকে তেমন একটা সাপোর্ট করতো না। ওই আমায় সব সময় পাশে ছিল। সবসময় আমাকে সাপোর্ট করতো।
অন্যদিকে আমার বাবা-মা কষ্ট পেতে লাগলো। তিন ভাই এর মধ্যে একমাত্র বোন। অনেক আদরের ছিলাম। পরে আমার মা আমাকে নিয়ে আসলো।আমিও আসলাম। আমার মা বুঝতে পারল যে ওর থেকে আমাকে আলাদা করা যাচ্ছে না। শুরু করলো ব্যাক মিউজিক করা। আস্তে আস্তে তার প্রতি আমার বিরক্ত লাগলো।
আমরা তখন ঝগড়া করা শুরু করলাম। পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করতাম। সব সময় ভুল না থাকলেও ভুলতাম ধরতাম। ও এগুলো বুঝতে পেরে। বিদেশ থেকে চলে আসলো। যখন আসলো আমার এসএসসি এক্সাম। এক্সাম কারণে আমি বাড়িতে আসতে পারলাম না। কলেজের পাশে একটা বাসা নিয়ে।
আমরা দুজনে থাকতে লাগলাম
একসাথে থাকলে। কোন ঝগড়া লাগত না দূরে গেলে। পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতাম। আবার একসাথে হলে সব কিছু ভুলে যেতাম। এভাবে আমার বাড়িতে আরো ব্যাক মিউজিক করতে লাগলো।আস্তে আস্তে ওর প্রতি আমার একটা বিরক্তি চলে আসলো। আমরা ওখানে এক মাস থাকার পর। একবারে বাড়ি আমি বাড়িতে চলে আসলাম।ও তার বাড়িতে চলে গেল।
আমাদের মধ্যে প্রচুর ঝগড়া। ওদের বাড়ি আমাকে নিলোনা। ও বলল ওদের ছোট বাড়িতে থাকতে পারবো না। আমাদের বাড়িতে রাখলো। সবচেয়ে বড় ভুল।আমি বাড়িতে চলে আসার পর আমার বাড়ি মানুষ আজেবাজে কথা বলতেছে। বলতে লাগলো ওর নামে। ওর উপর রেগে ছিলাম কিছুদিন পর জানতে পারলাম। আমি পেগনেন্ট এ কথা শুনে।
আমরা দুজনে অনেক খুশি হয়েছিলাম
আমাদের বাড়ি থেকে অনেক বকা দিতে লাগলো। অনেক কথা বলতে লাগলো। কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় না। অনেক কিছু বলতে লাগলো। ওদের কথায় আমি কান দিতে লাগলাম। আমি সারাদিন তার ফোনের অপেক্ষায় থাকতাম। ও আমার একটাবারও খোঁজ নিত না।
উল্টো ও আমাকে ব্লক করে রাখত। আমি ওর উপর রেগে গিয়ে আমি খুশি নেই। আমি ভালো নেই। অনেক অশান্তিতে আছি। না বুঝিয়ে ফ্যামিলি আরো পরে রাগ বাড়িয়ে দিল। ও আমাকে সব সময় বলতো আমাকে ডিভোর্স দিবে।
বলতো আমার টাকা নাই ডিভোর্স দেই না
আঁকা থাকলে অনেক আগেই ডিভোর্স দিয়ে দিতাম। আমার বাচ্চা হওয়ার নয় দিন আগে সত্যি আমি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দিলাম। আর ফ্যামিলির কথা মত রাজি হয়ে গেলাম। যেখানে বিয়ে দিবে তার সাথে কথা বলতে শুরু করলাম।
ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য
আমার তখন এটা মনে হতো। যার জন্য আমি এত কিছু করলাম। এত যুদ্ধ করলাম। এ মানুষটা আমাকে কিভাবে অবহেলা করে। মানুষটা কিভাবে মানুষ দেয় না। মানুষটা কিভাবে পরিবর্তন হয়ে গেল।
অন্যদিকে আমার পরিবার সবসময় রেডি থাকতো। আমাকে টাকাওয়ালা একটা ছেলের কাছে বিয়ে দেওয়ার জন্য। সেই ছেলেটা সবকিছু জানার পরেও। আমাকে বিয়ে করার জন্য রাজি ছিল। যাই হোক। আমি ডিভোর্স দেওয়ার পর। অনেকটা পাগলামি করে। সাথে অভিমান করে বাবা মা সব কথাই রাজি হয়ে যায়।
আমার বিয়েও ঠিক হয়ে যায়
ও আমাকে ইমপ্রেস করে ফেল। ওর সাথে আমি আবার কথা বলতে। ওদিকে আবার বাবা মায়ের পছন্দ ছেলেটা মানতে রাজি না। সে আমাকে বিয়ে করেই ছাড়বে। ও আমার বাবা মাকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করল। আমার দুই ভাই বিদেশ ওর কাছেই থাকে। বাবা মা যদি তার কথা না শুনে।
আমার দুই ভাইকে দেশে পাঠিয়ে দিবে। তাদেরকে দেশে পাঠিয়ে দিলে তারা পথে বসে যাবে। ওদিকে মেয়ে বাবা হওয়ার পর থেকে আমাকে নেওয়ার জন্য রাজি। মেয়ে বাবা মেয়েকে দেখার পর থেকে আমাকে নেওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। তারপরে আমি ঢাকাতে চলে যায়।
সেখানে এক মাস থাকি
আমার বাড়িতে বলে যা হয়েছে সব কিছু ভুলে। ওরা দুজন ছাড়া কেউ ভালো নেই। তারপরে আনার পরে উল্টো ঘটনা না। বাবা পছন্দ ছেলের সাথে আমার বিয়ে মেয়ের বাবা আমাদের বাড়িতে আসতে দেয় না। একবারে পাগলের মত হয়ে গেছে। আমার পায়ে ধরি মাফ চেয়েছে। আমিও সবকিছু ভুলে গিয়েছি কিন্তু আমি বাড়িতে আসার পর বাবা মা সুন্দর ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিয়ে ফেলেছে।
আমি আমার নিজের মধ্যে ছিলাম না। তারপরে আমি বুঝতে পেরেছি। আমার মেয়ের বাবাকে কতটা ভালোবাসি। এখন আমার কিছু করার নেই। এখন আমি আর কি করবো। শুনেছিও আমার বিয়ের খবর শুনে পোকা মারা ওষুধ খেয়ে ফেলেছে।
অনেকদিন আইসিএসের ছিল। এখন একটু সুস্থ। আমি খোঁজ নেওয়ার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু নিতে পারিনি। তারপরে একটা ছোট ভাইকে পাঠিয়েছি তার খোঁজ নিতে। ওর কাছে নাকি বলেছে ১০০% শিউর না। সেই ১০০% শিউর হবে ওকে নাকি কেউ বাজাতে পারবেনা। এটা আমি বিশ্বাস করি।ও আমাকে কতটা ভালোবাসে। কতটা পাগলামি করতে পারে
এখন আমার কিছুই করার নেই
আমার নতুন হাসব্যান্ড সবকিছু করে ফেলেছে। কিছুদিনের মধ্যে আমাকে সৌদি আরব নিয়ে যাবে। একদিকে আমার পরিবার আর একদিকে আমার ভালোবাসা।
আমি কোথায় যাব। পরিবারকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। আর দিতে চাই না।
আপনার মাধ্যমে ওর কাছে আমি ক্ষমা চাই। ও ভালো থাক। ওকে আমি আজও ভালোবাসি। ওকে আমি বলতে পারিনি।
আপনার মাধ্যমে এ কথাগুলো বলার কারণ হচ্ছে। ও আপনার প্রত্যেকটা লেখা পড়ে। এ লেখাটাও পড়বে। গল্পটা এ পর্যন্তই ছিল।এই গল্পে আমার কিছুই বলার নেই। শুধু একটা কথাই বলবো।
জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না। জীবন চলে যায়। কেউ কারো জন্য জীবন হারাবেন না।
কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন
😔😔