মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া মানেই যুদ্ধের সাথে লড়াই করা
একজন মেয়ে মানেই তো যোদ্ধা।
মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়া মানেই তো যুদ্ধ করা
মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া মানে |
পুরুষের স্পর্শ পেয়েছিলাম। যখন আমার বয়স আট বছর। তখন আপন খালাতো ভাইয়ের বেড়াতে এসেছিল আমাদের বাড়িতে। সবাই তাকে খুব ভালবাসত। খুব আদর করত।
তাই তার বিপক্ষে কথা বলার কোনো সাহস পাইনি। সেই লুকোচুরি খেলার নাম করে। আমাকে অন্য রুমে নিয়ে যেত। সেখান থেকে লুকিয়ে থেকে আমার শরীর এমন কোন জায়গা বাদ নেই। সেই সেখানে স্পর্শ করিনি।
আমি জন্মের পর নাকি কান্নার মেলা বসেছিল। আমার মাও আমাকে দুধ দেয়নি আমার বাবা ও দেওয়ালে আস্তে আস্তে কান্না করেছিল। শুধু আমি মেয়ে বলে জন্ম নিয়েছি বলে সবার ইচ্ছা ছিল আমি ছেলে হয়ে জন্মাবো। তাদের মনের আশা পূরণ করব। এটা ভাবল না তাদের কোন না কোন নারী থেকে জন্ম হয়েছে।
আমি তো অল্প বয়সে
আমার শরীর খুব বেড়ে গিয়েছিল। আমি সুন্দর কি ছিলাম কি জানি না। আমি ভেরি উঠার পর থেকে। মা বাবা আমার নিয়ে কোন চিন্তা ছিল না। তখন একটু একটু বুঝতে পারি। গ্রামের অনেক মানুষই আমার দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকাতো। আমি যখন ক্লাস প্রাইভে উঠলাম। তখন নানা মানুষের নানান কথা টিক তখনই আমার লেখাপড়া শেষ হয়ে গেল।
যখন আমার বয়স ১৩ আমার বাবা মারা যায়। সেদিন এসেছিল সবাই সান্তনা দিতে। তার সাথে কিছু চেয়ে নিতে উপর কি নানান রকমের মানুষ আমাকে আদর করার চলে। আমার বুকে হাত দেওয়ার চেষ্টা করত। মা যখন কাকার কাছে রেখে আমাকে কারোর ঘরে চলে গেল। সেদিন আমি বুঝেছিলাম এ পৃথিবীতে আমার আর কেউ রইল না। এক রাতে কাক্কার ছোট্ট ছেলে চুপি চুপি আমার রুমে আমার পাশে বসে আমাকে বলল। তোমার কেউ নেই তাতে কি হয়েছে আমি তো আছি।
সেদিন আমি তার কথা শুনে কান্না করেছিলাম। বাবা-মা চলে যাওয়ার পর এ কথাটা বলিনি। শুধু সান্ত্বনা দিয়েছিল যেহেতু লেখাপড়া করতাম না। কাকার ঘরে কাজ সারাদিন করতে হতো। আমার জন্য হয়ে গেল নিত্য জনের কাজ ঘর মোছা তালা-বাসন কাপড় দোয়া রান্নাটা।
আমি করতাম না রান্না জন্য সমস্ত কাটাকাটি আমাকেই করতে হতো। এই ছোট্ট বয়সে এত করতে করতে হাপিয়ে উঠেছিলাম। তবুও করতাম দরিদ্র ভেবে যেতিনা যেতি বুঝলাম। কাকি তার বড় ছেলে আমাকে সহ্য করতে পারেনা। সবসময় কাকা কি ছাপ দিয়ে তাকে বাবা রেখে যাও। একটু সম্পদ তোমার হাতটি কি জোর করে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি তখন মনে মনেআপনি ভাবতাম আমি আবার সম্পত্তি দিয়ে কি করব। কাকার কাছেইতে থাকি নিয়ে যাক না। এলাকার ছেলে নাকি বাড়ির সামনে দিয়ে ঘোরাঘুরি করে।
এই নিয়ে কাকা কাকি মধ্যে পাই ঝগড়া হয়। যথেষ্ট সবসময় আড়ালে থাকার চেষ্টা করতাম। আমাকে নিয়ে যেন বাড়িতে কোন সমস্যা না হয়। তাদের এই ঝগড়া ঝাটি আমি চুপচাপ শুনতাম। মাঝেমধ্যে বাবা-মায়ের ছবি ধরে কান্না করতাম। কোথায় ছিলা কোথায় এসে পড়লাম। মা-বাবা ছাড়া এই দুনিয়াতে সবাই স্বার্থের জন্য ভালোবাসে। এতটুক মেয়ে কতটুকু বুঝতাম। তারপরেও আমি এই বয়সে প্রাপ্তবয়স্কর মতো ভাব দেখাতাম কিভাবে ধীরে ধীরে ১৫ বছরের পা দিলাম। কিছু পরিবর্তন আসতে লাগলো আমাকে স্বপ্নেই বুঝানোর। কেউ ছিলনা নিজে নিজে চুপ থাকতাম।
সকালে কাকার বাড়িতে ঢাকায় চলে গেল। বড় ছেলের পরীক্ষা ছিল। তাই সে গেল না কাজ হল তাদের বড় ছেলে বাসায় আসলে খাবার দেওয়া আর তাকে দেখে শুনে রাখা। সব কাজ করি দিন কাটিয়ে দিলাম। রাতের বেলা সে আমাকে বলল। তুই আজকে আমার ঘরে থাকবি। তার মুখ এরকম কথা শুনে। আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমিও যদি অন্য কারো রুমে ঘুমাতে যাই। একা একা ঘুমাতে পারিনা। আমার ভয় লাগে। তাই তুই তুই আমার রুমে থাকবি। তারপরে কোন উপায় না পেয়ে। তার রুমে থাকতে হলো। উপরে ঘুমিয়ে আছে। মাটিতে শুয়ে আছি। আমার ঘুম আসছিলো না। গরম ছিল সাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে ছিলাম। 17 বছরের একটি ছেলের সাথে এভাবে ঘুমায়নি। কিছুক্ষণ পর আমি ভাইয়া কার্ড থেকে নামছে। মনে মনে ভাবলাম হয়তো ওয়াশ রুমে যাবে। ঘুমের বাপ ধরে পড়ে রইলাম।
আমার কোমরে কারোর হাত স্পর্শ আস্তে আস্তে আমার বুকের দিকে যাচ্ছিল। যখন বুক পর্যন্ত চলে আসলো। চোখ করলাম ভাইয়া মুচকি হেসে দুই হাত দিয়ে আমার বুকে চেপে ধরল। তখন পাথর হয়ে গেছি। মনে মনে ভাবছিলাম কি হচ্ছে এসব। তাকে ভাইয়া বলে ডাকি। সে আমার বড় ভাই। তখন আমি আর একবার বুঝলাম। পৃথিবীতে আমার কেউ নেই। তারপরে শুরু হলো অমান্য নির্যাতন। চোখ দিয়ে শুধু পানি পড়ছিল। শেষ রক্ষা হয়নি। কাকা কাকি আসলো। সমস্ত কিছু খুলে বললাম। কিছুতেই বিশ্বাস করলো না। বিশ্বাস কর নিজের ছেলেরকে। খারাপ বানিয়ে দিয়েছে আমাকে। এবং বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
আমি অনেক অনুরোধ করেছিলাম থাকার জন্য। তাই হয়নি। অবশেষে হল রাস্তায় সমাজের মানুষের খারাপের মানুষের হাত থেকে বাঁচার জন্য। আমি চিন্তা করলাম। আমি আত্মহত্যা করে ফেলব। রাস্তার উপরে বিশাল বীরজ থেকে লাফিয়ে পড়বো। মনস্থির করলাম। তখন পুলিশের শব্দ শুনে। সেখান থেকে গাড়ি যাচ্ছিল। পুলিশ এসে আমাকে ধরে ফেলল। আমার পরিচয় জানতে চেয়েছিল। তখন আমি তাদেরকে বললাম। এই পৃথিবীতে আমার কেউ নেই।
তাই আমি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম। সেই গাড়িতে একটি যুবক পুলিশ সদস্য ছিল। সে তার মায়ের কাছে নিয়ে গেল আমাকে। তখন আমি আমার জীবনের সকল কষ্ট কষ্ট থাকলো না। এই ছেলেটি আমাকে বিয়ে করবে বলে মন অস্থির করেছিল। বেশি ভালো মানুষটাকে ঠকাতে চায়নি। তাই আমি সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম সেদিন আমি একটা জিনিস নতুন করে শিখেছিলাম পৃথিবীতে যেমন পশুর মত মানুষ আছে। তেমনি মহান মানুষও আছে। তুই আমার সমস্ত ঘটনা শুনার পরেও আমাকে ধুমধাম করে বিয়ে করল।
আমাদের সংসার চলছে ভালো সহ্য হচ্ছে না। পারার প্রতিবেশী আশেপাশের মানুষ আমাকে নিয়ে। আমার শ্বশুরবাড়িকে নিয়ে নানান খারাপ কথা বলে শুনলে। আমার খুব কষ্ট হয়। জানিনা বাকি জীবনটা কিভাবে কাটবে। পুরুষেরা কতটা হিংসু হতে পারে এসমজের অসহায় মানুষেরা।
Wow